হাওজা নিউজ এজেন্সি: বিবৃতিটি দেওয়া হয় ‘রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র বিরোধী জাতীয় দিবস’ উপলক্ষে—যে দিনটি ১৯৮৭ সালের ২৮ জুন ইরাকের তৎকালীন স্বৈরশাসক সাদ্দাম হুসেইনের বর্বর রাসায়নিক হামলায় ক্ষতবিক্ষত ইরানের সরদাশত শহরের নিরীহ নাগরিকদের স্মরণে পালিত হয়।
আরাকচি বলেন, “ইরান হচ্ছে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল গঠনের অন্যতম প্রস্তাবদাতা দেশ এবং সেই সূত্রে শুরু থেকেই গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অগ্রভাগে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সরদাশতের শহীদদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এখনো ইরানের অগ্রাধিকার এবং এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি মৌলিক নিরাপত্তা শর্ত।
ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন, “যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো সাদ্দামের শাসনামলে তাকে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির উপাদান ও প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিল।” এ সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা সাদ্দাম সরকারকে আরও বেপরোয়া করেছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আরাকচি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল ইরানের ওপর যেসব হামলা চালিয়েছে, সেগুলো শুধু মানবাধিকার নয়, আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদেরও লঙ্ঘন। তার দাবি অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ইরানি নারী ও শিশু, সাধারণ নাগরিক, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সামরিক কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন।
পাল্টা প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ
আরাকচি জানান, ইরান ইতোমধ্যে রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থা (OPCW)-র নির্বাহী পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের “অমানবিক ও অবৈধ” কর্মকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্ত ও নিন্দা কামনা করছে তেহরান।
তিনি আরও বলেন, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের একাধিক সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলের সঙ্গে একযোগে হামলায় অংশ নেয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ২৩ জুন ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
২৪ জুন ইরান ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও শিল্প অবকাঠামোতে পাল্টা হামলা চালালে ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় বলে জানায় তেহরান।
শান্তির আহ্বান
বিবৃতির শেষে আরাকচি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সম্মিলিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে একদিন এমন একটি বিশ্ব গড়ে উঠবে, যেখানে আর কেউ গণবিধ্বংসী অস্ত্রের শিকার হবে না, বরং শান্তি ও সম্প্রীতির বিজয় ঘটবে।
আপনার কমেন্ট